নিজস্ব প্রতিবেদক –
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিতেই শান্তিনিকেতনের আদলে বিশাল ক্যাম্পাস হবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা মুক্তবুদ্ধি ও সংস্কৃতির চর্চা করবে। তিনি আরো বলেন, আজ থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে নির্বাধে কাছারি বাড়ি শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা করবে।
আজ ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির মিলনায়তনে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী একথা বলেন।
সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত এ সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা।
এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, এবং শাহজাদপুরের বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছিল কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণ। রবীন্দ্র সংগীতের অমিয় সুর আর নৃত্যের তালে মোহিত হয়ে উঠেছিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত শত শত রবীন্দ্রপ্রেমী।
রবীন্দ্র সংগীতের তালে পরিবেশিত দৃষ্টিনন্দিত নৃত্যের মাধ্যমে অতিথিদের অভ্যর্থনা জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মতবিনিময় সভা। সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেন, কেবল পুথিগত বিদ্যার মধ্য দিয়ে স্নাতক তৈরিই নয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দৃষ্টি দেয় শিক্ষার্থীদের সংবেদনশীলতার অনুশীলনে।
তিনি আরো বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক সংগঠন শিক্ষার্থীদের মানবিক মননশীলতা গঠনে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। তবে স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় সেসব কর্মকান্ড কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রস্তাবনা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠাবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিনামূল্যে কাছারি বাড়ি ব্যবহারের দাবি জানিয়ে উপাচার্য মহোদয় বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণ ব্যবহার করে শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা করলে রবীন্দ্রভাবনা ও সংস্কৃতি-প্রেমী শিক্ষার্থীরা এ দেশের সংস্কৃতি চর্চায় নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে।
অমর একুশে ২০২২-এর অনুষ্ঠান উদযাপনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বকুল তলার হারানো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। এই বকুল তলায় মুক্তমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা হলে এটিই মুক্তবুদ্ধি ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে বলে উল্লেখ করেন মাননীয় উপাচার্য। পাশাপাশি শাহজাদপুরে শিল্পকলা একাডেমি ও একটি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন মিলনায়তন প্রতিষ্ঠা করার কথাও বলেন তিনি।
মাননীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির বিস্তারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি হবে সেই চর্চার কেন্দ্রস্থল।মতবিনিময় শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।