ছবিঃ মেট্রোপলিস-
মাসুম হোসেন-
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার দুই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে জেলার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। তাদের অধিকাংশই ভোট দিতে আগ্রহী নন। তবে কখনও যদি ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তখন তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন-এমনটাই জানা গেছে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে।
বগুড়া-৬ ( সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন ২০ জন। তাদের মধ্যে বগুড়া-৬ আসনে ১১ জন। আর বগুড়া-৪ আসনে রয়েছেন ৯ জন।
এর আগে, বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন পদত্যাগ করেন। ফলে আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১ ফেব্রুয়ারি ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া দুটি আসনের একটিতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দিলেও অন্যটিতে দলটির কোনো প্রার্থী নেই। বগুড়া-৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীনদল থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে বগুড়ার দুই আসন থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে হিরো আলম একতারা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এই দুই আসনের যেকোনো একটিতে নির্বাচিত হবেন বলে তিনি আশাবাদী।
সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা ঘুরে অন্তত ১০০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ভোট চুরি, গায়েবি মামলা দেয়া, অর্থ পাচারেরসহ নানা অভিযোগ তুলেন। এরমধ্যেও তারা ক্ষমতাসীনদলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন। তবে তাদের কেউ এবারের ভোট নিয়ে উৎসাহী নন।
কাহালুর চারমাথা এলাকায় এক চা দোকানে গিয়ে কথা হয় সাগর হোসেন নামে এক যুবকের সঙ্গে।
তিনি বলেন, দেশে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। ভোট দিলেও কিছু হবে না, না দিলেও কিছু হবে না। আর যদি ভোট দিতেই যাই, তাহলে পাগল হিরো আলমকেই ভোট দিব। তিনি (হিরো আলম) নির্বাচিত হোক আর না হোক আমার ভোট তিনিই পাবেন। দুর্নীতিগ্রস্থ, অর্থ পাচারকারীদের ভোট দেওয়ার বদলে পাগলকে ভোট দেওয়া অনেক ভালো।
একই উপজেলার বাসিন্দা হযরত আলী ও আবুল কালাম বলেন, ভোট নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। চায়ের দোকানগুলোতেও এবার ভোটের কোনো আলোচনাও হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনো নির্বাচনই সঠিকভাবে হবে না। উপজেলা থেকে অনেক ভালো মানুষকে গায়েবি মামলায় ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। দেশে ভোটের পরিবেশ নেই। যদি কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তখন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবো।’
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল বাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় শামছুল হক ও মোফাজ্জল হোসেনসহ অন্তত ৩০ জনের সঙ্গে।
তারা বলেন, দেশে এখন ভোট বলে কিছু নেই। আমরা কেউ ভোট দিতে যাবো না। গ্রামের অনেকেই জানেনই না যে, কবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে!
একই দিন সন্ধ্যায় বগুড়া সদরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও কথা হয়।
সদরের বাসিন্দা রুহুল আমিনসহ আরও অন্তত ২০ জন বলেন, উপনির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। নির্বাচনকে ঘিরে আমরা কিছুই ভাবছি না। ভোট দেওয়ারও ইচ্ছে নেই।