তানজিল সিরাজ অনঘ –
আমরা যেন রূকপথার সাগরে ভেসে বেড়ানো
পালতোলা সময়ের নৌকায় পাড়ি জমিয়েছি
প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বর্তমানে।
যে সময়ে, তারা দেখে পথের দিশা খুঁজে পেত নাবিক
সেসময়ে আমার আকাশে তারা হয়ে তুমিও প্রেমের পথ চেনাচ্ছিলে আমাকে।
আমি উদ্ভ্রান্তের মতো তোমার পিছুটানে একপা-দুপা করে এগোই…
আমার একহাতে সুগন্ধি অর্কিডের মুকুট।
আরেকহাতে তোমার নামে লেখা সব কবিতার প্যাপিরাসখণ্ড।
ধরা দিচ্ছি দিচ্ছি করেও তুমি মত্ত এক তীব্র বাসনার লুকোচুরিতে।
যে লুকোচুরিতে লুকিয়ে থাকার ভানে তুমি আছো আমার ঠোঁটের ঠিক কাছে
যতটা কাছে এলে নিশ্বাসেরা এক হয়ে যায়…
এরপর?
একফালি দীর্ঘ নোনতা রাত।
তোমাকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিলো অপেক্ষা নামক একচোখা বীভৎস দানব।
আমি আবার উদ্ভ্রান্ত হলাম।
তোমাকে খুঁজে পাওয়ার নেশায় উন্মাদ হয়ে
চষে বেড়ালাম অলিম্পাস থেকে টারটারাস।
কোথায় যাই? কোথায় পাই?
অবশেষে তোমায় পেলাম আলোকবর্ষ দূরে- বন্দি।
কী অদ্ভুত এক মুগ্ধ ঘুমে তুমি সেখানে বিমোহিত!
আমি মৃদু পায়ে এগিয়ে গেলাম।
পয়মন্ত রাজকুমারের মতো হাটু গেঁড়ে বসলাম দেবীরূপী তোমার শিয়রে…
আমাকে দেখে ছিঁড়ে খেতে হিংস্র শব্দে ছুটে এলো অপেক্ষা নামক সেই দানব।
আমি তোমার ঠোঁটে আলতো ঠোঁটের ছোঁয়া দিলাম।
একি!
আমার চুমুতে ভর করেই চোখ মেললে তুমি।
আদুরে আহ্লাদে প্রাণ বেঁধে আলিঙ্গনে জড়ালে।
আমাদের প্রণয় দেখে দানবটা হিংসায় হয়ে গেল এক পাথুরে মূর্তি।
অপেক্ষার রাজ্য থেকে ছুটে বেরিয়ে এসে আমরা উঠলাম সময়ের নৌকায়…
পেছনে ভেসে আসছে অপেক্ষার গ্রাসে চাপা পড়া শত যুগলের চাপাকান্ন
ক্লান্ত তুমি-আমি ঠোঁটে ঠোঁট রেখে আমরা হলাম…
ঘুমিয়ে গেলাম।
ঘুম ভেঙে দেখি আমরা এসে পৌঁছেছি বর্তমানের ঘাটে।