ছবিঃ মেট্রোপলিস-
মাসুম হোসেন-
বগুড়ায় পরিবেশ অধিদফতরের অভিযানে ৯টি অবৈধ ইটভাটায় ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই সময় একটি ইটভাটার চিমনির এক পাশের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। তবে এ অভিযানের পরপরই আবারো ওই ইটভাটাগুলো কার্যক্রম শুরু করে। ইটভাটার মালিকরা ভাষ্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ‘বিবেচনায়’ ইটপ্রস্তুত করা হচ্ছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলার শাজাহানপুর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুন্নেছা আক্তার। পরিবেশ অধিদফতরের বগুড়া কার্যালয়ের উদ্যোগে এ অভিযান চালানো হয়।
ওই সময় উপজেলার দুরুলিয়া গ্রামের এন.এম.বি ব্রিকস, খলিশাকান্দি গ্রামের এল. জি.বি ব্রিকস-১, এল জি বি ব্রিকস-২, এল জি পি ব্রিকস, এস বি এফ ব্রিকস, টপ ব্রিকস, এস এস বি ব্রিকস এবং জোকা গ্রামের মেসার্স জীবন ব্রিকস, মেসার্স মণ্ডল ব্রিকস ইটভাটায় ৫ লাখ টাকা করে মোট ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে এন.এম.বি ব্রিকস ইটভাটার চিমনি একপাশে কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া হয়।
ওই দিন পরিবেশ অধিদফতরের বগুড়া কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ মিকাইল হোসাইন বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় ইটভাটা মালিকদের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে, পোড়া ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট অথবা ফ্লাই অ্যাশ , লাইম ও জিপসামের তৈরি এফএএল-জি ইট প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরিবেশ সুরক্ষায় এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলার দুরুলিয়া ও খলিসাকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশ অধিদফতরের সকল নির্দেশনা অমান্য করে অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত ৯টি ইটভাটায় পুরোদমে কার্যক্রম চলছে। এমনকি চিমনির একপাশ ভাঙা নিয়েই ইটপ্রস্তুত করছে এন.এম.বি ব্রিকস ইটভাটা।
জানতে চাইলে এন.এম.বি ব্রিকস ইটভাটার স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম কাজীনূর বলেন, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই ইটপ্রস্তুত করা হচ্ছে। তারা আমাদের মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন বা বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তারা কেন বিবেচনা করছেন তা তো আপনি বোঝেন। ওই রকম বিবেচনা আপনিও করেন। আমি দেখা করবো আপনার সঙ্গে।
জানতে চাইলে শাজাহানপুর উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শাহীন বলেন, ইটভাটা বন্ধের জন্য আমাদেরকে লিখিতভাবে জানানো হয়নি। এ কারণে জরিমানার পরেও আমরা ইটভাটা চালু রেখেছি। এছাড়াও এই মৌসুমে ইটভাটা চালু রাখতে গতকাল জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদফতরে স্মারলিপি দিয়েছি। ইটভাটার কার্যক্রম আমরা চালাচ্ছি।
পরিবেশ অধিদফতরের বগুড়া কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ মিকাইল হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
পরিবেশ অধিদফতরের বগুড়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে ইটভাটার কোনো লোকজন আসেননি। তারা অনুমতির জন্য আবেদনও করেননি। আমার নাম কেন তারা ব্যবহার করছেন, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখা হবে।