মেট্রোপলিস রিপোর্ট
১৯৫২ সালের আজকের দিনে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরিদী। জন্ম ঢাকায় হলেও পিতার চাকুরির কারণে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
১৯৬৫ সালে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এই অভিনেতা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন নাট্যাঙ্গনের সঙ্গে।
মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- তিন মাধ্যমেই ছিল তার সমান পদচারণা। তিন দশকের বর্ণিল ক্যারিয়ারে তিনি উপহার দিয়েছেন অনেক জনপ্রিয় নাটক ও চলচ্চিত্র।
১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জে মহল্লার একটি নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয়ের যাত্রা শুরু হুমায়ুন ফরিদীর। স্কুল জীবনে থাকতেই নির্দেশনার খাতায় নাম লেখান। সে নাটকের নাম ছিল ‘ভূত’। তবে টিভি নাটকে হুমায়ুন ফরিদী প্রথম অভিনয় করেন আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এ।
‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘তিনি একজন’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘চাঁনমিয়ার নেগেটিভ পজেটিভ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’, ‘সংশপ্তক’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নীল আকাশের সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘বিষকাঁটা’, ‘শৃঙ্খল’, ‘ভবের হাট’ এসব নাটকে তার অভিনয় দর্শককে শুধু মুগ্ধ ও তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছে।
আশির দশকে তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। পরবর্তীতে বাংলা সিনেমার জগতে নিজেই ‘’অনন্য এক অধ্যায়’’ হয়ে উঠেছেন হুমায়ুন ফরীদি।
অর্জনের ঝুলিতে আছে নানা পুরষ্কার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদক গ্রহন করেছেন অভিনয়কে পুঁজি করে।
হুমায়ুন ফরীদির অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বিশ্ব প্রেমিক’, ‘ভণ্ড’, ‘ঘাতক’, ‘ব্যাচেলর’, ‘অধিকার চাই’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘টাকার অহংকার’, ‘সন্ত্রাস’, ‘দহন’, ‘লড়াকু’, ‘দিনমজুর’, ‘বীর পুরুষ’, ‘আজকের হিটলার’, ‘দুর্জয়’, ‘শাসন’-সহ অসংখ্য সিনেমা উপহার দিয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লাখো ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন হুমায়ুন ফরীদি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।