ঋণ
মনিরুজ্জামান বাদল
ছেঁড়া-ময়লা দু’টাকার নোট কিংবা
একটি ফুটো পয়সার শব্দ শুনে
ভিখারি ওড়ায় আকাশ ভরা আশীর্বাদের
ফুলানো বেলুন,
এ-ঋণ আমি শোধিব কেমনে?
মনিবের মজুরির সব দায় শোধ শেষে
কাঁধে কিংবা কোলে নিয়ে যারা
পূর্ণ করেছে আমার শিশুবেলার সমস্ত সাধ
খিলখিল হাসিতে ভরা সকাল-বিকাল,
এ-ঋণ আমি শোধিব কেমনে?
রাখাল-বন্ধু ফজল হিমু আলাল
সকলে আমরা একসাথে হাসি একসাথে কাঁদি
একসাথে খেলি সারাবেলা
চাঁদের আলোয় খুঁজে পাই আমাকে
সূর্যের এ-ঋণ শোধিব কেমনে?
বিলের কোলে শাপলা ভাসে
পদ্ম শুনে ভ্রমরের গান
শুদ্ধ জলে শুচি হই আমি যে বারবার
বাঁচিয়ে রাখি জীবনের সব সুন্দর কোলাহল
জলের এ-ঋণ শোধিব কেমনে?
হায়েনা-দানবের নখর যখন রক্ত ঝরায়
হৃদয়ে আমার একাত্তরে,
শূন্য হাতে সাহসী সকল মুক্তিসেনার যুদ্ধে যাওয়া,
রক্ত ঢেলে ছিনিয়ে আনা নিজের সূর্য!
বিসর্জনের এ-ঋণ শোধিব কেমনে?
কিছু কিছু দায় আছে কখনও শোধাবার নয়
শোধিতেও চাই না আমি,
সবার ভার অন্তরে নিয়ে সকলের সাথে
থাকি যেন মিশে বাংলার মাটিতে
জয় বাংলা স্লোগানের সুমধুর সুরে।
কবি মনিরুজ্জামান বাদল বাংলাদেশ সরকারের বন, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন