Photo: The Metropolis –
নওশিন ইয়াসমিন –
গত শনিবার দেশের তরুণ সংগঠকদের হাতে “জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড” তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সিআরআইয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার উদ্যোগে ঢাকার সাভারে অবস্থিত শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউটে ৫ টি বিভাগে পুরস্কৃত করা হয় ১০ টি সংগঠনকে, যেগুলোর মধ্যে একটি মিলন স্মৃতি পাঠাগার। এর প্রতিষ্ঠাতা এবং উদ্যোক্তা শেখ মোহাম্মদ আতিফ আসাদ জামালপুর জেলার বিভিন্ন গ্রাম ও রেলস্টেশনে গড়ে তোলা ১৬ টি পাঠাগারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন জ্ঞানের আলো।
একদম শুরুতে ২০১৮ সালে ২০ টি বই নিয়ে নিজ বাড়ির বারান্দায় মিলন স্মৃতি পাঠাগারের কাজ শুরু করেন আতিফ। এরপর ধীরে ধীরে পাঠাগারের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে একজন সহৃদয়বান ব্যক্তি ১০০ টি বই পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে বই সংরক্ষণের সমস্যা দেখা দেওয়ায় তিনি একটা আলমারিও কিনে পাঠান। বর্তমানে তার পাঠাগারে প্রায় ৩০০০ এর মতো বই আছে। শুরুতে নিজের স্বল্প আয় দিয়ে বই সংগ্রহ করা শুরু করলেও পরবর্তীতে অনেকেই স্বপ্রণোদিত হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তার দিকে। আতিফ এখন প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দিয়ে আসেন। আর দূরের এলাকায় সাইকেলে করে পাঠকদের কাছে বই পৌঁছে দেন। এভাবে করতে করতে এখন তার স্থাপন করা পাঠাগারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ টি।
আতিফ ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি রেলওয়ে স্টেশনে সর্বর্প্রথম স্টেশন পাঠাগার শুরু করেন। “এক কাপ চায়ের বিনিময়ে বই পড়ুন”, এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গড়ে তোলা হয়েছিল এই পাঠাগার – এক কাপ চা পানের বিনিময়ে বই পড়ে জ্ঞানের আলো জ্বালাবে পাঠকরা। ব্যতিক্রম এ পাঠাগারের মাধ্যমে এভাবে বইপড়া আন্দোলনকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান আতিফ আসাদ।
ছোটবেলা থেকেই আসাদের বইয়ের প্রতি ভালোবাসা গড়ে উঠেছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় নিজ জেলার ৬ টি গ্রামে গ্রামভিত্তিক পাঠাগারের পাশাপাশি ১ টি শিশু পাঠাগার, ৫ টি স্টেশন পাঠাগার আর ৪ টি পথ পাঠাগার গড়ে তোলেন তিনি। তার গড়ে তোলা স্টেশন পাঠাগারে যাত্রা বিরতিতে যাত্রীরা অনায়াসে বসে বসে বই পড়তে পারে। ভবিষ্যতে দেশের ১০০ টি রেলওয়ে স্টেশনে পাঠাগার তৈরির স্বপ্ন রয়েছে আতিফের।
“জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত ও আপ্লুত। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে পাঠাগারের এমন অর্জন নিঃসন্দেহে অনেক বড় পাওয়া। আর প্রধানমন্ত্রী-পুত্রের হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারাটা তো আনন্দের বটেই।” – জানান মিলন স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোক্তা শেখ মোহাম্মদ আতিফ আসাদ।