‘’চলোনা যাই, বসি নিরিবিলি, দুটি কথা বলি, নিচু গলায়।‘’
কিন্তু নাগরিক ব্যস্ত জীবনে গানের কথা শুনে অবকাশ কাটানোর ফুরসত মেলা চাট্টিখানি কথা নয়। তাই সময় বুঝে অবসর কাটাতে বন্ধু ও প্রিয়জনকে সঙ্গি করে টুপ করে বেড়িয়ে আসুন পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র, ঝরনা, গুহায় বা প্রকৃতির কাছাকাছি। পরিকল্পনা শেষে ব্যাগ গোছাতে গিয়েই যত ঝক্কি।
সঙ্গে কি নিবেন, কি নিবেন না ভেবে ভেবেই একবেলা শেষ। নিজেরা বেড়িয়ে পড়ার আগে সঙ্গে করে নিতে পারেন কিছু জরুরী অনুষঙ্গ। তাতে আপনার ভ্রমন হবে আরামদায়ক, স্বস্তিদায়ক, ঝামেলামুক্ত।
কত দিনের ভ্রমণ করবেন হিসেব করে পোশাক সঙ্গে নিবেন। ছেলেরা শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, আন্ডারওয়্যার, ট্রাউজার সঙ্গে নিবেন। নারীরা বেছে নিতে পারেন টি-শার্ট, শার্ট, কুর্তি, টপস, জিন্সপ্যান্ট, আন্ডারওয়্যার। নদী বা সমুদ্রে হলে শাড়ীতে দারুন মানাবে। স্কার্টেও দেখাবে পরিপাটি আধুনিক।
স্বস্তি পেতে পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজও। তবে পাহাড়ে উঠতে চাইলে আঁটসাঁট পোশাক জড়ানোই উচিত। সঙ্গে শিশু থাকলে তাঁর পোশাক ও প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ নিতে হবে অবশ্যই। যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে জেনে নিতে হবে আগেই। ঠান্ডা থাকলে শীতের পোশাক হিসেবে জ্যাকেট, সোয়েটার, মাফলার, টুপি, উলের হাত ও পা মোজা গুছিয়ে নিতে হবে আগেভাগেই। পোশাক তো নিতেই হবে, তবে অতিরিক্ত পোশাক ভ্রমণে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে, তাই পরিমানমত পোশাক নেয়াটাই সুবুদ্ধির পরিচয়।
ভ্রমণের আরেক জরুরী অনুষঙ্গ জুতা। ভ্রমণে যেহেতু হাঁটাহাঁটি করতে হয় বেশি, কাজেই কেডস বা স্নিকার হতে পারে নারী-পুরুষ সবার জন্য আদর্শ সমাধান। হাই-হিল ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। ভালো মানের ফ্লাট জুতা আপনার পা জোড়াকে রাখবে সুরক্ষিত। বাটা ও এপেক্সসহ ব্র্যান্ডের প্রতিটি শো-রুমেই মিলবে ভ্রমনের উপযোগী জুতা। সেখান থেকে দেখতে স্টাইলিশ, আরামদায়ক ও পছন্দসই এক জোড়াকে সঙ্গি করে বেরিয়ে পড়তে পারেন আবার বেঁধেও নিতে পারেন অন্য জোড়া।
যেখানেই যাবেন, সঙ্গে করে কিছু শুকনো খাবার নিয়ে নেবেন। সাথে ইন্সট্যান্ট নুডুলস রাখা সুবিধাজনক। যেগুলোতে শুধুই গরম পানি যোগ করে নিলেই চলে। বাজারে এমন বোল ইন্সট্যান্ট নুডুলস কিনতে পাবেন সামান্য খুঁজলেই। শুকনো খাবার হিসেবে বিস্কুট, কেক, বাদাম, শুকনো ফল, চিড়া, মুড়ি রাখা যেতেই পারে। তবে এসিডিটি হতে পারে এমন খাবার না নেয়াই ভালো।
ছাতা, সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন, প্রয়োজনীয় প্রসাধনী, কোমরবন্ধ, চিরুনী, টর্চ, দিয়াশলাই, সুঁই-সুতা, টুথব্রাশ, থার্মোমিটার, মোবাইল ও ল্যাপটপের চার্জার, রোদচশমা, সেলফি স্টিক, ছুরি, দড়ি বা রশি নিতে ভুলে যাওয়া চলবেনা কিছুতেই। পানিতে বেড়াতে গেলে লাইফ জ্যাকেট, ফুঁ দিয়ে ফোলানো যায় এমন ধরনের টায়ার রাখাটা খুব জরুরী। অতি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের মধ্যে ওরস্যালাইন, স্যাভলনক্রিম, হঠাৎ ব্যথা, বমি, জ্বর ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, ইনহেলার, ব্যান্ডেজ রাখা জরুরী। মেয়েদের অবশ্যই স্যানিটারি ন্যাপকিন সাথে নিতে হবে। ভ্রমণ সঙ্গি শিশু খুব ছোট হলে ফিডার, প্যাম্পারস ও ক্যারিয়ার ছাড়া বের হওয়া একেবারেই উচিত নয়। কিন্তু এত দরকারী কেজো জিনিস নেবার জন্য ব্যাগতো চাই। ফ্যামিলি ট্যুরের ক্ষেত্রে ট্রলি ব্যাগ হতে পারে আদর্শ।
তবে ট্রলি সঙ্গে করে তো আর সব সময় বের হওয়া যায় না। ট্রলি বিশ্রামের জায়গায় রেখে পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়াটাই ভালো। একার ভ্রমণে ব্যাকপ্যাক সঙ্গি হলেই যথেষ্ট। বাজারে নানান রঙ, নকশা, মাপ ও আকৃতির ট্রলি ব্যাগ ও ব্যাকপ্যাক কিনতে পাওয়া যায়। এবার পিঠে একটি ব্যাকপ্যাক ঝুলিয়ে প্রয়োজনীয় সবকিছু তাতে ভরে নিয়ে অপেক্ষা শুধু ছুটে চলার।