নওশিন ইয়াসমিন-
মুকেশ আম্বানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সেইসাথে বিপুল শেয়ারের মালিক। বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের নাম বলতে বললে, শুরুর দিকে আসবে ভারতীয় এই ধনকুবেরের নাম। মুকেশ আম্বানি ‘ফরচুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২২’এর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। মুকেশ আম্বানি বরাবরই আলোচনার শীর্ষে থাকেন। তার অসাধারণ স্থাপত্যের আকাশচুম্বী বাড়ি অ্যান্টিলিয়ার জন্যও রয়েছে তার অন্যরকম পরিচিতি।
আম্বানির এই প্রাসাদসম বাড়িটি রাজপ্রাসাদের থেকে কোন অংশেই কম নয়। মুম্বাইয়ের দক্ষিণ অংশের আল্টামাউন্ট রোডে ২০০৪ সালে বাড়ির কাজ শুরু হয় এবং ৬ বছরের কাজ শেষে ২০১০ সালে বাড়িটি নির্মিত হয়। ৪ লাখ বর্গফুট জমির ওপর অ্যান্টিলিয়া নির্মান করতে মুকেশ আম্বানিকে খরচ করতে হয়েছিলো প্রায় ১৫০০০ কোটি টাকা। আম্বানির এই বাড়িটির নামকরন করা হয় পর্তুগাল এবং স্পেনের কাছে আটলান্টিক মহাসাগরের এক পৌরাণিক দ্বীপের নামানুসারে। পৃথিবীর অন্যতম এই দামি বাড়িটি ২৭ তলা হলেও দেখতে ৪০ তলা বাড়ির মত।
অ্যান্টিলিয়া মুকেশ আম্বানির শখের বাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাড়িটি তিনি এবং তার স্ত্রী নিতা আম্বানি নিজ হাতে সাজিয়েছেন। মুকেশ আম্বানি এবং তার স্ত্রী নিতা আম্বানির নির্দেশে এই বাড়িটি এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে কোন ফ্লোরের সাথে কোন ফ্লোরের মিল পাওয়া যাবেনা। বাড়ি নকশা এবং নির্মানের জন্য দুইটি বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানি ভাড়া করেছিলেন তারা। উভয় কোম্পানি একত্রে এমনভাবে কাজ করেছে যাতে বাড়িটির কোন কক্ষ একই রকম না হয়। আম্বানির এই বাড়িটি এমনভাবে নির্মান করা হয়েছে, রিখটার স্কেল ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও বাড়িটি থাকবে সুরক্ষিত। বিলাসী এই বাড়িটিতে একটি করে মন্দির, বলরুম, সুইমিং পুল, স্পা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আইসক্রিম পার্লার, ব্যক্তিগত সিনেমা হল, জিম, এবং ডান্স স্টুডিও রয়েছে। আম্বানি পরিবারের সদস্যদের স্বল্প সময়ে যাতায়াতের নিশ্চয়তা দিতে রয়েছে ৩টি হেলিকপ্টার। সেগুলো সফলভাবে অবতরনের জন্য অ্যান্টিলিয়ার ছাদেই রয়েছে ৩টি হেলিপ্যাড। এছাড়াও প্রতিটি ফ্লোরে দ্রুত যাতায়াতের জন্য ৯টি অত্যন্ত দ্রুতগামী লিফট ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়,এই বাড়িতে একটি কৃত্রিম স্নোফল রুম রয়েছে।
আম্বানি পরিবারের সদস্যদের রয়েছে অসংখ্য গাড়ির সমাহার আর এসব গাড়ি রাখার জন্য তাদের এই বাড়িটির মধ্যে ৬তলা বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং এরিয়া রয়েছে। যার মধ্যে অনায়াসে ১৬৮টি গাড়ি রাখা যাবে। এছাড়াও এই বাড়িটির মধ্যে আরও রয়েছে নিজেস্ব গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার, যাতে করে মেরামতের জন্য অন্য কোথাও গাড়িকে স্থানান্তর করতে না হয়। সব থেকে বেশি অবাক করার বিষয় হল মুকেশ আম্বানি এবং তার পরিবারের সদস্যদের দেখাশোনা করার জন্য এই বাড়িটিতে ৬০০ জনের বেশি কর্মী কাজ করে। যারা প্রত্যেকই উচ্চশিক্ষিত।