মেট্রোপলিস রিপোর্ট-
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপন করার অভিযোগে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা দুলু জেলা পরিষদের সদস্য পদেও রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। বুধবার দুলুর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তারিকুল রহমান।
এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য আওয়ামী লীগ নেতা দুলুকে চিঠি দেয় দুদক। একই বছরের ৫ মার্চ সেই আদেশে স্বাক্ষর করেন দুলু। পরবর্তীতে ২০২০ সালেরই ২৫ জুন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন তিনি।
দুদক সূত্র বলছে, দুলু তার সম্পদ বিবরণীতে ৮০ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য গোপনসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হিসাব দেন। এছাড়াও ১ কোটি ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৯০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং তা ভোগ দখল করছেন বলে অনুসন্ধানে জানা যায়। একই সঙ্গে আয়ের উৎস গোপন করার উদ্দেশ্যে সম্পদ স্থানান্তর ও রুপান্তর করেন তিনি। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সম্পদ বিবরণীতে দুলু উল্লেখ করেন, তার মোট ২ কোটি ৯২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে। এরমধ্যে ১ কোটি ৮২ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ আছে। আর ১ কোটি ১০ লাখ ৫২ হাজার ২৬৯ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
পরবর্তীতে তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক জানতে পারে, ৩ কোটি ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ২০৯ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে দুলুর। এরমধ্যে তার স্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৪২২ টাকার। আর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৭ টাকার। এই হিসাবে দুলু ৮০ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হিসাব দাখিল করেন।
এছাড়াও দুদকের অনুসন্ধানে দুলুর নামে ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণের তথ্য পাওয়া যায়। তার ঋণের টাকা বাদ দিলে মোট সম্পদ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ২০৯ টাকার।
দুলুর আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দুদক দেখে, তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৭১৭ টাকা। এই টাকা যোগ করলে দুলুর মোট অর্জন করা সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৬ টাকার। এসব সম্পদ অর্জনের বিপরীতে দুলুর গ্রহণযোগ্য সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৭১ লাখ
৫২ হাজার ৩৬ টাকার। এই হিসাবে ১ কোটি ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৯০ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন দুলু। বর্তমানে এসব সম্পদ ভোগ-দখল করছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুর রহমান দুলু বলেন, আমার সম্পদের সঠিক হিসাব আমি দিয়েছি। এরপরেও দুদক মনগড়া হিসাব করেছে। সম্পদ বিবরণীতে যা উল্লেখ করেছি, এর বাইরে আমার আর কিছুই। আমি আশাবাদী সঠিক তদন্ত হলে আমি বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।