back to top
19.2 C
New York
Sunday, October 6, 2024

TMN Shop

spot_imgspot_img

ছোট্ট গ্রামে সাত ঘণ্টার উৎসবের মেলা

নবান্নের মেলায় মাছের দোকান।

মাসুম হোসেন –

ছোট্ট একটি গ্রামে দীর্ঘ বছর ধরে হয়ে আসছে নবান্নের মেলা। সাত ঘণ্টার এই মেলায় এবার ১৮ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়েছে। নবান্ন উৎসবকে ঘিরে বছরে একবারই এই মেলার বসানো হয়। অল্প সময়ের এই আয়োজন মাছের মেলা হিসেবেও পরিচিত। মেলাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রাম জুড়ে থাকে উৎসব মুখর পরিবেশ। আনন্দে মেতে উঠেন সনাতন ধর্মাবলম্বীর মানুষেরা।

গ্রামটির নাম গণ্ডগ্রাম হিন্দুপাড়া। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার অন্তর্গত ওই গ্রাম কালীতলা নামেই বেশি পরিচিত। গ্রামটির আদি কালীবাড়ী মন্দিরের সামনে শুক্রবার ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১২ টা পর্যন্ত চলে এই মেলা। সেখানে সব ধর্মের শত শত মানুষের আনাগোনো হয়। শুধু ওই গ্রামের বাসিন্দারাই নয়, আশেপাশের অন্তত পাঁচ গ্রামের মানুষ নবান্নের এই মেলা থেকে মাছ, দই-মিষ্টিসহ সবজি কেনেন।

নবান্ন উৎসব হলো নতুন আমন ধান থেকে পাওয়া চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। নবান্ন উৎসব উদযাপন করা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি প্রাচীন প্রথা। হিন্দুশাস্ত্রের নির্দিষ্ট রীতিনীতি মেনে এই উৎসব পালন করেন তারা। উৎসবমুখর পরিবেশে এ দিনটি উদযাপিত হয়। এরই অংশ হিসেবে বাংলার অগ্রহায়ণ মাসে কালীতলায় ওই মেলা বসে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেলাতে ১৫ টির মত মাছের দোকান বসানো হয়েছিল। প্রতিটি দোকান থেকে ৬০-৭০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। এবার মেলায় প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও মেলায় প্রায় ৬ লাখ টাকার দই-মিষ্টি ও ২ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়েছে।

এক যুগ ধরে নবান্নের এই মেলাতে মাছ বিক্রি করে আসছেন ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক।

তিনি বলেন, ‘এবার মেলাতে ৬০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি। সবারই বেচাকেনা ভালো হয়েছে। কাতল ৪০০-৪৫০, রুই ৩৫০-৪০০ ব্রিগেট মাছ ৩০০-৩৫০ ও সিলভার কার্প মাছ ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে।’

মাছ ব্যবসায়ী দুলাল প্রামাণিক বলেন, ‘নবান্নের এই মেলাতে মূলত মাছের চাহিদা থাকে বেশি। একারণে মাছের ব্যবসা এখানে ভালো হয়।’

দই বিক্রেতা সুমন কুমার মোহন্ত  ও পরিতোষ চন্দ্র ঘোষ বলেন,  ৫২ হাজার টাকার দই বিক্রি করেছেন তারা। এই দিনে যেমন মাছেন চাহিদা থাকে তেমনি দই-মিষ্টিরও চাহিদা বেশি। মেলাতে ছোট-বড় মিলে দশটি দইয়ের দোকান রয়েছে। সব দোকানেই ভালো ব্যবসায় হয়েছে।

শাজাহানপুর উপজেলার দক্ষিণ বেজোড়া গ্রামের বাসিন্দা সুজন কুমার সরকার। তিনি কালীতলা গ্রামের নবান্নের মেলাতে গিয়ে বাজার করেছেন। কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘নতুন ধানের চাল কয়েকদির আগেই ঘরে তোলা হয়েছে। কিন্তু আজকের দিনের জন্য আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে নবান্ন উৎসবের মধ্যদিয়ে নতুন ধানের ভাত খাওয়া হবে। সেকারণে নবান্নের এই মেলা থেকেই বাজার করেছি।’

কালীতলা গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গল চন্দ্র শীল বলেন, ‘নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সাত কেজি ওজনের একটি ব্রিগেট মাছ কিনেছি। মাছটির মূল্য ২১০০ টাকা। বড় মাছ দেখে পরিবারের সবাই অনেক খুশি হয়েছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত চন্দ্র সরকার। পেশায় তিনি কৃষিশ্রমিক। মেলা থেকে ১২৫০ টাকায় ৫ কেজি ওজনের একটি সিলভার কার্প মাছ কিনেছেন তিনি।

সঞ্জিত বলেন, ‘নবান্ন উৎসবে পুরো গ্রামে খুশির আমেজ বইছে। এই আনন্দে যোগ দিতে মাছসহ দই-মিষ্টি কিনেছি।’

নবান্ন উপলক্ষে ওই মেলার আয়োজন করে গণ্ডগ্রামের আদি কালীবাড়ী মন্দির কতৃপক্ষ।

মন্দিরের কোষাধাক্ষ্য কনক কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘নব্বই দশক থেকে নবান্ন উপলক্ষে সাত ঘণ্টার এই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাতে মাছ ও দই-মিষ্টি বিক্রি বেশি হয়। সবমিলে এবার মেলায় প্রায় ১৮ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়েছে। এরমধ্যে ১০ লাখ টাকার শুধু মাছই বিক্রি হয়েছে।

MD IMRAN HOSSAIN
MD IMRAN HOSSAINhttps://themetropolisnews.com/
Md. Imran Hossain, a certified SEO Fundamental, Google Analytics, and Google Ads Specialist from Bangladesh, has over five years of experience in WordPress website design, SEO, social media marketing, content creation, and YouTube SEO, with a YouTube channel with 20K subscribers.

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

3,800FansLike
300FollowersFollow
250SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles