ছবি : মেট্রোপলিস-
মেট্রোপলিস রিপোর্ট-
তরুণ লেখক ইমদাদ হকের লেখা সার্বিয়া ভ্রমণ বিষয়ক ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘দূতাবাস না থাকায় সার্বিয়ার সঙ্গে আমাদের সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশার কথা হলো, আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পণ্য আমদানিতে সার্বিয়া আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা কাজ করছি সার্বিয়াতে জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে। এছাড়া সার্বিয়া যেনো বাংলাদেশ থেকে সরাসরি লেদার ও গার্মেন্টস পণ্য আরো নিতে পারে, সেই প্রক্রিয়াও এগিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সার্বিয়াতে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। অনেক বড় বড় বিল্ডিং হচ্ছে। এসব কাজের জন্য তারা লোক চায়। দানিউব নদীর তীরে উন্নয়নের জন্য বড় প্রজেক্ট করছে তারা। এজন্য তারা ইলেকট্রিশিয়ান ও কন্সট্রাকশন ওয়ার্কার চায়। তাদের ওখানে অনেক চাকরি। তারাও কাজের জন্য লোক নিতে চায়। কিন্তু ওখানে যেতে হলে ভিসার জন্য ইন্ডিয়ায় যেতে হয়। এটা বড় ঝামেলার। তবে দিল্লী থেকে কনস্যুলার টিম প্রেরণের ফলে ঢাকায় থেকে তারা সার্বিয়ান ভিসা দিয়েছে। এর ফলে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো বাংলাদেশি সার্বিয়ায় গেছে। ওখানে কাজের অনেক সুযোগ আছে।’
ড. মোমেন বলেন, সার্বিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা জার্মানি বা ইতালি থেকে বাংলাদেশি লেদার আর গার্মেন্টস পণ্য কিনে। সরাসরি কিনতে পারে না বলে তাদের চড়া দামে কিনতে হয়। সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে কাজ চলছে। সার্বিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশে আসবেন, সেই সময়ে এসব বিষয় চূড়ান্ত হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি কামাল চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী। গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ইকতিয়ার চৌধুরী ও সাধনা আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম ও লেখক ইমদাদ হক।
ইমদাদ হকের এই বইটিতে সহজ সরল ভাষায় উঠে এসেছে সার্বিয়ার ইতিহাস, ঐতিহ্য, বর্তমান অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষাব্যবস্থা, খেলাধুলাসহ সব কিছু। লেখকের সার্বিয়া ভ্রমণে প্রাকৃতিক-ঐতিহাসিক নানা দৃশ্যপটের সঙ্গে নতুন উপজীব্য হয়ে ওঠে সার্বিয়ান এক তরুণী। ঠিক প্রেম নয়, প্রেমের চেয়ে কম কিছুও নয়। পার্থিব দৃশ্যপটের সঙ্গে উঠে এসেছে রোমান্সের হৃদয় ছোঁয়া-না ছোঁয়ার গল্পও। যার পুরো বর্ণনা এসেছে ‘সার্বিয়া: শুভ্র শহরের দেশে’ ভ্রমণ গদ্যে।
ইমদাদ হকের এটি দ্বিতীয় বই। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় শুরু করেন সাংবাদিকতা। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তার লেখা প্রথম বই ‘ক্যাম্পাস রিপোর্টিং : সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি’। পেশা হিসেবে সাংবাদিকতার নানা দিক উঠে এসেছে বইটিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যারা সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চান তাদের জন্য এ বইটি হতে পারে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। তার দুটি বই পাওয়া যাচ্ছে রকমারিতে। পেশাগত জীবনে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সাংবাদিকতায় ছিলেন ইমদাদ হক। মাঝখানে এই পেশার আনুষ্ঠানিক খানিকটা বিরতিতে এখন কাজ করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে।